শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০০৮

হাবিব এর ডেনমার্ক গমন।

হাবিব, আমার বন্ধু, গত ১৭ই আগষ্ট এদেশ ছেড়ে চলে গেছে। ও student visa পাইছে Denmark এ। খবরটা যখন আমাকে বলছিল- "রাজু দোস্ত, আমি ভিসা পাইছি, দোস্ত এখন কাউকে ব্যাপারটা বলিসনা, আমি নিজে সবাইকে surprise দিব"। সে কি খুশি সেদিন ওর কন্ঠে।
তারপর একদিন আমি, হাবিব, রবিন আর আপন চারজনে মিলে Dhoni (Banani chinees restaurant) তে বসে লাঞ্চ সারলাম, হাবিবই লাঞ্চ করালো। আপন আর রবিন এর ইচ্ছা ছিল আমরা তিনজন মিলে হাবিব কে লাঞ্ছ করাবো, কিন্তু আমার পকেটের অবস্থা বরাবরই ফকিরের দশা, তাই আমি টু শব্দটি করার সাহস দেখাইনি। তাছাড়া হাবিব নিজেই লাঞ্চ করাতে চাইছিলো। আর আমি চাইছিলাম হাবিব এর সাথে সবার বিদায়ী সাক্ষাত করাতে। আমরা ওকে একটা গেঞ্জি গিফট করলাম।
ব্যাস, তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বনানী ছাড়ছিলাম। আমি IDB যাব। বেটা তখন আরেক ফন্দি আটলো। "চল দোস্ত, আমিও যাব, একটা IPOD কিনতে হবে"। আমি বললাম- "আব্বে হালায়, তুই যাচ্ছিস IPOD এর দেশে, এখান থেকে টাকা খরচ করবি ক্যান?" কিন্তু নাহ, ও কিনবেই। তারপর উনি বাসে যাবেননা, রিকশা দিয়ে ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে কচুক্ষেত হয়ে উনি মিরপুরের ভিতর ঢুকবেন। কারন উনি এই ফাকে ওনার ইয়ের বাসার সামনে দিয়ে একটু উকি মেরে যাবেন। সারা রাস্তা ইয়ের সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে গেল। তারপর IDB থেকে ৫০০০ টাকা দিয়ে একটা IPOD কিনে চলে এল। আমি IDB তেই থেকে গেলাম, কাজ ছিল।

১৭ তারিখ সকাল বেলা ওর আমার সাথে বেরুনোর কথা। কিন্তু বিকালে ফোন করে আমাকেই ওর বাসায় আসতে বললো। বুঝলাম সারাদিন বেশ ধকল গেছে, আজকে আবার ওর ইয়ের সাথে দেখাও করতে হইছে, বিদায়ী সাক্ষাত (অবশ্য আমার জানামতে ভিসা পাবার পর ওরা বহুবার বিদায়ী সাক্ষাত সারছে, তারপরেও সাধ মেটেনি)। তাই আমি ওর বাসায় যাব ঠিক করলাম। আম্মাকে বলার সাথে সাথে আম্মা লাফ দিয়ে উঠলো- "আমিও যাব"। আমি প্রথমে একটু খুশিই হইছিলাম কিন্তু মেয়েলোক নিলে যা হয় আরকি, আমি যেখানে ৪ টার সময় বেরুবো ঠিক করছিলাম, সেখানে আমাকে ৬ টার সময় বেরুতে হল আম্মাকে নিয়ে। আম্মা আবার ২ টা পিজা বানিয়ে নিল (আমার মা নতুন পিজা বানাতে শিখছে, তাই এখন কোন অজুহাত পেলেই পিজা বানায়)। ওদের বাসায় আম্মাকে রেখে আমি আর ও বেরুলাম ওর আত্মীয় সজন্দের সাথে দেখা করে বিদায় নিতে। তারপর ঘরে আসলাম, এসে দেখি ঘরে সোহ্রাব, ফাহিম, মৌ ( হাবিব এর আরও বন্ধু) আরও কে কে বসে আছে। এরপর আমার সেই উল্লেখ্য পিজা এর অংশ আসলো যা মৌ আবার আমাদের মধ্যে বাটোয়ারা করলো। সব মিলিয়ে একটা উৎসব উৎসব লাগছিল আমার কাছে কিন্তু তারপরেও কেমন যেন একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে সবার মধ্যে সেটা টের পেলাম কিছুক্ষন পর।

শুরু হল কান্নাকাটির পালা। হাবিব এর ফ্যামিলিতে কখনো কেঊ নাকি বাড়ি ছেড়ে বাইরে গিয়ে থাকেনি। মানুষের কান্নাকাটি দেখলে আমার ভিষন খারাপ লাগে (যদিও আমায় দেখে বোঝা যায়না কারন আমার মানুষের কান্না আসেনা)।
হাবিবকে জড়িয়ে ধরে সবাই কিছুক্ষণ কাদলো আর আমি চুপ করে হাবিব এর পিছে দাঁড়িয়ে রইলাম (মনে মনে ভাবছিলাম, আমি কবে যাব! আদৌ কি যাব!!!)।
তারপর এলো আমার পালা, গাড়িতে ওঠার ঠিক আগে ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না। আমার তখন মনে হছিল, এবার মনে হয় আমি আর পারবো না, আমিও দিলাম পানি বের করে, কান্না মনে হয় এক ধরনের ছোয়াচে সমস্যা। য়ামি ব্যাক্তিগতভাবে ওর কিছু Emotion শেয়ার করেছি। আমি জানি ও কেমন Emotional, একবার খুব বলতে ইচ্ছে হলো- হাবিব আর কারো কাছে কখনও নিজের হৃদয়ের ভিতরটা দেখাতে যাসনে। ধুর, আমি কিছুই বলতে পারলাম না। ও আমাকে জড়িয়ে ধরে বেশ কয়েকবার বললো - বন্ধু, তুই আমার সাথে airport পর্যন্ত আয়। কিন্তু আমি ওর কথা রাখতে পারেনি (আসলে আমি ভাল বন্ধু হতে পারিনি, কখনও পারবো কিনা তাও জানিনা)।

হাবিব যাওয়ার ১ দিন পরেই আমাকে ফোন করে। শুনলাম ২৮ তারিখ ওর ক্লাশ শুরু হবে। ও ভালই আছে। কিছু ছবি পাঠালো, সবার সাথে শেয়ার করলাম।










দোস্ত হাবিব, ভাল থাকিস...

1 টি মন্তব্য:

নামহীন বলেছেন...

hei yaar missen u too much.can i have ur cell number.the writer scorpion<>he describe the time very nicely.awesome.thanks & also thanks for the cutest & dangerous web site like scorpion i ever seen.keep it up yaar.ur frend & best wisher AZHAR.